ফেঁসে যাচ্ছেন নুরঃ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা অনুমোদনের আবেদন মন্ত্রণালয়ে

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে এই আবেদন করেন বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপ-আইন সম্পাদক সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মো. জিশান মাহমুদ।

ফেঁসে যাচ্ছেন নুরঃ রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা অনুমোদনের আবেদন মন্ত্রণালয়ে
ছবি- অনলাইন হতে সংগৃহীত

ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান সাংবাদিকদের অবহিত করেন, ‘গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুর মোসাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।

অনলাইন ডেস্কঃ

হালের সবচেয়ে বেশি আলোচিত ও সমালোচিত ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে এবার রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমোদন চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।  আবেদনে বলা হয়েছে, মোসাদের সঙ্গে নুরের বৈঠক রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। আইন অনুযায়ী নুর শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। 

জুলাই ৯,২০২৩ইং রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে এই আবেদন করেন বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপ-আইন সম্পাদক সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মো. জিশান মাহমুদ। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেছেন, গত ৩ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারি বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদ নামে তথাকথিত রাজনৈতিক দলের সদস্য ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ওমরাহ হজ করার কথা বলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গিয়ে অস্বীকৃত ইসরাইল রাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকার উৎখাতের দেশবিরোধী ও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।  পরে ঐ সংবাদকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা বলে নুরুল হক নুর তা বারবার উড়িয়ে দিলেও ২২ জুন ঢাকাস্থ ফিলিস্তিন দূতাবাসে রোহিঙ্গাদের জন্য ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) খাদ্য সহায়তা বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান সাংবাদিকদের অবহিত করেন, ‘গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুর মোসাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘মোসাদের সঙ্গে বৈঠক বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। যারা মোসাদের সঙ্গে বৈঠক করেন, তারা নেতা হতে পারেন না। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূতের এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়। এরই মধ্যে গত ৮ জুলাই একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদি স্বীকার করেন যে, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর দুবাইয়ের সিটি সেন্টারে অবস্থিত স্টার বাক্স কপি শপে ৩ ঘণ্টার বৈঠক করে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন জিততে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য মেন্দি এন সাফাদির সাহায্য চান নুর।

আইন অনুযায়ী ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৯৬ ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আমলে নেওয়ার পূর্বশর্ত সরকার কর্তৃক অনুমোদন প্রয়োজন হয়। এ কারণেই স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে মামলার অনুমতি প্রার্থনা করেছেন বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপ-আইন সম্পাদক ও সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মো. জিশান মাহমুদ।

এক প্রশ্নের উত্তরে জিশান মাহমুদ বলেন, স্বরাষ্ট্র সচিব বলেছেন, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমোদন দেওয়ার সম্পূর্ণ এখতিয়ার সরকারের। তারা সরকারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলবেন। 

এদিকে এর আগে  একই অভিযোগে শাহবাগ থানায় পৃথক রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আবেদন করেন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন। তাকেও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

নুরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারের দাবিতে রোববার বিকালে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক সভা করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। এরপর আল মামুন শাহবাগ থানার ওসির সঙ্গে দেখা করেন। থানা থেকে বেরিয়ে এসে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ তাদের আরও কিছু তথ্যপ্রমাণাদি দাখিল করতে বলেছে। 

শাহবাগ থানার ওসি নূর মোহাম্মদ গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, বিষয়টি সেন্সিটিভ এবং এটা এখন পর্যন্ত পর্যালোচনাধীন আছে। কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কিছু জাতীয় দৈনিক  নুরুল হক নুরের ফোনে একাধিকবার ফোন দিয়ে বক্তব্য জানতে চাইলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি বলে জানা গেছে।

ক্রাইম ডায়রি/ রাজনীতি